শিক্ষক নিয়োগে আমূল পরিবর্তন, নয়া নিয়োগ পদ্ধতি WB SSC-এর
শিক্ষক নিয়োগে আমূল বদল আনল পশ্চিম বঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে শিক্ষক নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় গুচ্ছ বদল আনা হয়েছে৷ এবার দেখুন পূর্ণাঙ্গ গেজেট নোটিফিকেশনের বাংলা অনুবাদ৷
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশনামায় সবিস্তারে গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশ করে জানানো হয়েছে, শিক্ষক পদে এখন থেকে ২১বছর থেকে ৪০ বছর বয়সী কর্মপ্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন৷ লিখিত পরীক্ষায় পাশ করলেই তারা চাকরির জন্য বিবেচিত হবেন৷ কোনও রকম ইন্টারভিউয়ের হবে না৷
১. নিয়মাবলী- ক) এই নয়া নিয়মাবলী পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন ( জুনিয়র হাইসেকেন্ডারি এবং হায়য়ার সেকেন্ডারি স্কুলে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ) রুলস, ২০১৯ নামে পরিচিত হবে৷
খ) সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে নয়া নিয়মাবলী কার্যকর হবে৷
২. ক) ‘অ্যাক্ট’ অর্থে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন অ্যাক্ট, ১৯৯৭ বোঝানো হয়েছে৷
খ) ‘নিয়োগকর্তা’ - ডেপুটি সেক্রেটারির পদের নীচে কোনও অফিসারের নিয়োগ অধিকার থাকবে না৷
গ) ‘বোর্ড’ অর্থাৎ ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন অ্যাক্ট, ১৯৬৩-এর অধীনে ওয়েস্ট বেঙ্গলববোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন ৷
ঘ) ‘বিভাগ ’ - আপার প্রাইমারি থেকে হায়য়ার সেকেন্ডারি লেভেল পর্যন্ত বিষয়/ গ্রুপ, বেতনক্রম, লিঙ্গ, সংরক্ষণ অনুযায়ী ভাগ করা হয়েছে৷
গ) ‘সংশ্লিষ্ট বিষয়’ –এর নিরিখে ফাঁকা পদে প্রার্থী নিয়োগ করা হবে৷
ঘ.) ‘ডিগ্রি’ অফবা ‘ডিপ্লোমা’ বোঝাতে ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বা ইন্সটিটিউশন থেকে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন স্বীকৃত পেশাগত যোগ্যতা বলা হয়েছে৷
ঘ) চূড়ান্ত শূন্যপদের তালিকা – রাজ্য সরকারের অনুমোদনক্রমে সহকারী শিক্ষক পদে শূন্যপদ ঘোষণা করেব বোর্ড৷
ঙ) ‘NCTE’ হল – ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন অ্যাক্ট, ১৯৬৩ র অধীনে গঠিত সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন৷
৩. যে পাঁচটি ভাগে নিয়োগ পদ্ধতিকে ভাগ করা হয়েছে-
- স্কুলে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে সহকারি শিক্ষক - গ্রুপ ১
- নবম ও দশম শ্রেণির জন্য সহকারী শিক্ষক- গ্রুপ ২
- একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জন্য সহকারী শিক্ষক- গ্রুপ ৩
- শরীরশিক্ষা পদে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে সহকারী শিক্ষক - গ্রুপ ৪
- কর্মশিক্ষা পদে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে সহকারী শিক্ষক- গ্রুপ ৫
৪. শূন্যপদ এবং মেধার ভিত্তিতে প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে৷
বিদ্র: কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে ১০টি শবন্যপদের নিরিখে x, y এবং z তিনটি বিভাগেই আবেদন করতে পারেন ৷ যথাক্রমে তার প্রথম পছন্দ x, দ্বিতীয় পছন্দ y এবং তৃতীয় পছন্দ z ৷ যদি তিনি প্রথম ক্যাটাগরিতে ১১ তম স্থান, দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে সপ্তম এবং তৃতীয় ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় স্থান দখল করেন তাহলে x ক্যাটাগরিতে তিনি চাকরি পাবেন না৷ তাঁকে নিয়োগ করা হবে y ক্যটাগরিতে ৷
৫. নিয়োগ পদ্ধতি – সেকসন বি অনুযায়ী সেন্ট্রাল কমিশননের মাধ্যমে স্টেট লেবেল টিচার্স সিলেকশন টেস্ট (এসএলটিএসটি)-এর ভিত্তিতে ফাঁকা পদ পূরণ করা হবে৷
৬. রাজ্য সরকার অনুমোদিত নিয়োগ কমিটি বিভিন্ন পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুর করার জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনকে লিখিত ফরমাশ পাঠাতে পারে৷
৭.বিজ্ঞপ্তি- ইংরেজি, বাংলা, হিন্দি সহ বিভিন্ন ভাষায় সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতে পারে৷
৮. স্টেট লেভেল টিচার্স সিলেকশন টেস্ট পরীক্ষার জন্য কত টাকা দিতে হবে তা নির্ধারণ করবে সেন্ট্রাল কমিশন৷
৯. বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্য ফর্ম জমা করতে হবে ।
১০. কী ভাবে পরীক্ষা পরিচালনা করা হবে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে তা নির্ধারণ করার ক্ষমতা রয়েছে সেন্ট্রাল কমিটির ৷
কোনও দুই প্রার্থী যদি একই নম্বর পান তাহলে তাদের মধ্য লিখিত পরীক্ষায় অধিক নম্বর প্রাপ্তকে বেছে নেওয়া হবে ৷ সেক্ষেত্রেও সমান নম্বর থাকলে জন্ম সালের নিরিখে বিচার করা হবে ৷ এক্ষেত্রে সুযোগ পাবেন বয়োঃজেষ্ঠ প্রার্থী৷
১১. প্যানেলটি গঠিত হওয়ায় এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হবে৷ বিশেষ কোনও ক্ষেত্রে সন্ট্রাল কমিশন প্যানেলের মেয়াদ বাড়াতে পারে৷
১২. নিয়োগ- প্যানেল থেকে প্রার্থীদের নাম বোর্ডের কাছে সুপারিশ করবে সেন্ট্রাল কমিশন ৷ নথিপত্র যাচাই করার পর ওয়েস্ট বেঙ্গল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন রুলস , ২০১৮ মোতাবেক প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে ৷
১৩. মিথ্যা বা জাল নথির ভিত্তিতে যদি কোনও প্রার্থীর সুপারিশ করা হয় এবং তা তদন্তে ধরা পড়লে সেই নিয়োগ বাতিল করা হবে৷
১৪. প্যানেল প্রকাশিত হওয়ায় তিন বছরের মধ্যে সেন্ট্রাল কমিশনকে পরীক্ষার ওএমআর শিট নষ্ট করে ফেলতে হবে ৷
১৫. কোনও কারণে ফাঁকা পদ পূরণ না হলে তা নিয়োগ সংক্রান্ত কতৃপক্ষকে অবগত করতে হবে৷
১৬. সেন্ট্রাল কমিশনের কোনও সিন্ধান্তে প্রশ্ন উঠলে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার৷ সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে৷
১৭. পূর্ববর্তী নিয়ম অনুয়ায়ী যে সকল নিয়োগ পদ্ধতি সম্পন্ন হয়েছে, সেক্ষেত্রে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে না৷
১৮. নয়া নিয়ম চালু করার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা দখা গেলে তা সমাধানের জন্য রাজ্য সরকার সেন্ট্রাল কমিশনকে নির্দেশ দিতে পারে অথবা নিজেও কোনও পদক্ষেপ করতে পারে৷
আরও বিস্তারিত জানুন নীচের ভিডিওতে
No comments:
Post a Comment